Monday, November 26, 2007

নাই নাই সময় আমার

বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে কথা গান দু-এক কলি ভেসে আসে ওই কাঁসাই, হলুদ বালিতে কোন চিত হয়ে আছে নারীএমন ঢাল, কোথাও একটু ঘোলা জলে সূর্যকরিমপুর ছাড়িয়ে চারিদিক পাট ছড়িয়ে সব আলো হয়ে উঠল বাংলাদেশের ঘ্রাণে সারিন্দা হাতে গান গেয়ে গেল জীবনভোর ভাসতে থাকা কিছু মানুষ সবুজ ক্ষেতের উপর বুড়ো বক উড়ে গেল কোন বিষ মাখান মাছটার কথা মনে করে

আমার ঝুলির ভেতেরে বাংলার গান আর অভিমান জমা হয়ে আছেকাটোয়ায় রনপায়ের দল লম্বা লম্বা পা ফেলে চলে গেল তার মায়ের মৃত্যুসাংবাদের দীর্ঘ ছায়া ফেলে সারাদিন জুড়ে নকশাঘোড়া নাচের দলের ব্যবস্থা হোল কোনক্রমে গালিচার মত ধান ক্ষেত জুড়ে লাল ঘোড়া ছুটে গেল দূরে বাউলের মাচায় যে ভাবে সন্ধ্যা নামে ঠিক সেই ভাবে আমি নেচে উঠি

পুরুলিয়ায় ছৌ-নাচের দলের পিছনে আমি গড়ে তুলি এক মস্ত কারখানা আর সব শুনসানবুকের ভিতর শব্দ সব ছাতু করে দিলে বাঘমুন্ডি পাহাড়ের নিচে অবিন্যস্ত জলাশয়ে সবুজ পাতার উপর একে একে বসিয়ে নিচ্ছি পদ্ম ফুলগুলো আমি ক্রমশ পাল্টে যেতে শুরু করেছি হয়ত পাল্টাই প্রতিনিয়ত, টের পাই নাএখন লেখার সময় নয় ছুটে চলেছি হারিয়ে যাওয়া কথা আর ছিন্ন গানের চাঁদমালায় আমার দেহ ভেঙে মিশে যাচ্ছে প্রকৃতিতে, আর রক্তবীজের মত জন্ম নিচ্ছে নতুন নতুন গান সুন্দরবনে জল নেমে গেলে যখন বাদ্যযন্ত্রের মত শিকড়েরা জেগে উঠল,আমি বিধ্বস্ত শরীরেও কিছুটা গান হয়ে উঠলাম

লোকে বলে, বলে রে ঘর বাড়ি বালা না আমার

ফ্যানের ব্লেডসকল রাষ্ট্রসকলের দখলদারির অধিক যে মিমাংসার সূচনা করে কোকাকোলার বোতল তাতে নির্লিপ্ত। আগুনের গনগনে শিখা হোল্ডলে গুটিয়ে ট্রেনে চেপে বসলে তার শেষে আছে এক পার্বত্য উপত্যকা। ঝর্ণা, কুয়াশা, মেঘ সব আছে নাচও আছে, গানও আছে, মেষশাবকদের পিছে ছুটে চলা তরুনীর আগে উড়ে যায় শতাব্দী বাতিল প্লাষ্টিকের ঠোঙা।

বহুদিন পাহাড়ে যাই না। স্রোতের কোন মীমাংসা নেই। খুব ভোরে আঁচ দেওয়া উনুনের ধোঁয়ারা বন্ধ জানালার কাঁচে কুয়াশার মত এঁকে দেয় স্মৃতি। যমপটে বাঁকিয়াছে চোখটুকু আঁকা। অজয়ের দুইপারে তুলির গাভীর টান আর সরু জলে মাছেদের মত খেলা করে রূপসী চাঁদেরা। ভাত রান্নার আগে করতোয়া উঁকি মারে কোন কাব্যসমগ্র থেকে।

কোকাকোলা থেকে গেল অবিচল। খোকা বুড়ো হল, কে কাকে বেল্লিক বলল, বিপক্ষের উল্লুক পাটকেলে ঘায়েল হয়ে অবশেষে খালাসিটোলার অস্ত্রাগারে ঝাঁপ দিল পুনরুজ্জীবনের উদ্দেশ্যে। পিকাসোর পুরু গোঁফের তলা দিয়ে যখন বরযাত্রী পৌঁছাল কোন এক কুয়াশার ঘুন ধরা পাহাড়ী শহরে, দিদিশাশুড়ির পিসতুতো বোনের ছোট ননদ এক বোতল কোকোকোলা নিয়ে সবাইকে ঢেলে দিতে লাগল প্লাষ্টিকের অস্বচ্ছ সাদা গ্লাসে। মাংসের গন্ধ মিলে মিশে অন্ধকারকে করে তুলল আরো কালো ঘন।

রাত্তির একটার পরে যখন দরকার পড়ল আরও একটা কম্বলের, কারো চুল থেকে খসে পড়া আধ শুকনো বেলফুলের মালা কিছুতেই আর বাগ মানতে চাইল না। অজয়ের দুই তীর ভর্তি বালি বারে বারে পা টেনে দহরছে সুগন্ধের মত। বরযাত্রীদের দেওয়া গোলাপের একটা একটা করে পাপড়ি খসে সকাল হচ্ছে, পিকচার পোষ্টকার্ডের মত।

এ অবস্থায় বেশি বড় লেখা সম্ভব না। বেশিক্ষণ সম্ভব না রাত্রিকে ধরে রাখা। কম্বল না পেয়ে সারারাত চরে বেড়াতে হল চরে। কিছুতেই সেই ফ্যানের ব্লেডগুলির সংঘর্ষের মধ্যে যদিও সে পাহাড়ে তা ছিল টাওয়ারহীন। তবুও মানুষের আশা বেঁচে থাকে হাঁটাচলার মধ্যে। এই লেখাটা আর কিছুতেই বড় করা যাচ্ছে না। সকাল হয়ে যাওয়ার আগেই কোকোকোলার খালি বোতলে ঠোক্কর লেগেছে পায়ে, ছিপি গড়িয়ে গেছে পায়ে আর বুদ্ধের চারপাশে সুজাতার মত ভোদকার একটা সুন্দর ফ্লেভার উঁকি মেরে যাছ্ছে সারা অজয় জুড়ে। ফুলগুলোর কথা মনে পড়ে না। তারা কবে পচে মরে কথাসরিত সাগরের মত ভেসে গেছে পলিও আক্রান্ত অজয় বরাবর।

যেতে যেতে তোমার দুয়ার হতে

ক্লান্ত। এর বেশিকিছু নয়। এখন লেখার কথা নয়। এ তো নেহাত কথার কথা। পারলে কি বোর্ড বালিশ হয়ে পড়ে, চোখের উপর আবার ভর করছে ছোটবেলার উড়োজাহাজ।

আমাদের স্পেস ক্রাফট, সেই টগরগাছ। ভাঙা সাইকেলের প্যাডেল-চেন নিয়ে হামেশাই উড়ে যায়। কবে যেন স্পেস পাই না, সে টগর গাছ হয়ে পড়ে, বড় হয়ে যাই। স্পেস বার সম্বল।

সমুদ্রতটে একাকী নাগরদোলা ঘুরে চলেছে। যে পাখি জানালার বাইরে এই ডাকল সেও মমি হয়ে গেল। পাঁউরুটি সাজানো পিরামিড। হলুদ বালি। একা নাগরদোলা, ঘুরছে।

নেশা করতেও ইচ্ছা করছে না। ফ্রিজে সারসার বোতল। চুমুক দিলে মোসেন ম্যাকম্যালবাফের গাববেটা দেখে ফেলা যাবে। পায়ের তলায় মনে হচ্ছে চিনির দানা, পাও খুব হালকা পিঁপড়ের মত।

টিভি জুড়ে ধুসরতা। বন্ধ। উপরের তাকে বই সারমর্মের মত সাজানো। ঘুমের ঘোরে কত কি লেখা হয়! আমিও লিখি, কাজে যাই, মদ ছুঁই না। আমি ভালো ছেলে।

পলা সেনগুপ্তের ছবিটা হেলে আছে, একপাশে। আমার মস্তিস্কের মত। মরনকূপে মটোরসাইকেল হেলে ভারসাম্য রাখছে। একটা সিগারেট ধরাই।এঁকে বেঁকে উড়ে যাক ধোঁয়া, ঐ জানালার বাইরে। আমি এখন যেতে পারবো না।

পোমো সিরিজ: একটি সিনেমার (পুরস্কার প্রাপ্তব্য) খসড়া

ভূমিকা:রবার দিয়ে কিছু অংশ মুছে ফেলায় সরু সরু সরলরেখার ইলিশের রূপান্তর ঘটল। রেখা আর রেখা থাকল না, অমিতাভ জয়াকে বিয়ে করে নিলেন। বাচ্চাকাচ্চা হল। ফলে, ঐশ্বর্য রাই এর হিল্লে হল, সবাই মিলে সিনেমা করতে লাগল।

সিনেমা: হাতের তালু ফুল হলে আঙ্গুলের পাপড়ি হওয়া ছাড়া গতি নেই। তারা দুলতে লাগল বাতাসে। একদল সৈন্য কুচকাওয়াজ করতে করতে গাছের কান্ড বরাবর হাঁটছিল। তারা হাঁ করে বাতাস শুসে নিল।রাস্তা ফাঁকা হয়ে গেলে, গাড়ি হা হা করে চলতে লাগল।কার্বন মনো অক্সাইড কম বের হতে লাগল। ধুম ১ ও ২ দেখার পর, সকলেই চারিচাকা ও বাইক লইয়া অমায়িক ভাবে ঘুরতে লাগল, সুন্দরী নায়িকারা যার যার পাড়াথেকে বেরিয়ে গাড়ি চড়ে ধুম ঘুরলেন ও ধুম জ্বর বাধিয়ে বসলেন। সবাই তাদের সেবা করতে লাগল। ফ্যাক্টরি লক আউট হয়ে গেলে চিমনিগুলো বোকা হাবা হয়ে গেল, কালো ধোঁয়া বের হলো না। পরিবেশবিদরা ইকোলোজির জন্য অনেক সেমিনার করলেন এবং অরণ্যে রোদন করলেন। তারা সব ছিল বিষমাল। তাদের কান্নার পানিতে গাছগুলো সব পটাপট মরে গেল।কার্বন ডাই অক্সাইডের কনজাম্পশন বন্ধ হয়ে গেলে অর্থনীতিবিদেরা প্রোডাকশন বন্ধ করতে নির্দেশ দিলে সকরার পুলিশ দিয়ে নাকের ফুটো জ্যাম করে দিলেন। কার্বন ডাই অক্সাইড শেষ হয়ে যাওয়ায় পড়ে রইল অক্সিজেন আর হাইড্রোজেন। তারা মনের দু:খে জড়াজড়ি করে কাঁদতে গিয়ে জল হয়ে গেল।

ইলিশেরা এতক্ষণ ওয়েট করছিল, জল দেখে ঝাঁপিয়ে পড়ল।গীতিকার, সুরকার, ড্যান্স ডিরেকটর, ফাইট মাষ্টার সবাই ওয়েট করছিল। সবাই তাদের দিয়ে যম্পেশ সিনেমা বানিয়ে ফেল্লেন।

উপসংহার: সরকারী টাকায় সিনেমাটা বানানো হবে,তাই শেষে অমিতাভ, জয়া, অভিষেক, ঐশ্বর্য সবাই মারা যাবে, কাউকে অমর বানানো যাবে না।ইলিশ-টিলিশ ধরে কেটে ফেলতে হবে। সবাইকে বাধ্যতামূলক জলে জাল নিয়ে নামতে হবে।ওয়াটার স্পোর্টস পাঠ্যসূচির ভেতর ঢুকিয়ে ফেলতে হবে। বাচ্চা-কাচ্চা সবাই ইলিশ ধরবে আর খাবে। কাঁটা লাগলে কাঁটা লাগা গানটা শুনবে।ঐ মরমী মিউজিক ভিডিও দিয়ে সিনেমাটা যা আসলে একটি সম্পূর্ণ আর্ট ফিল্ম, সেটা শেষ হবে।

লেখালিখির আগে আমরা, কি ভালো দিন কাটাইতাম

তিনি বললেন,আগে কি ভালো দিন কাটাইতাম, তিনি আছেন লন্ডনে, সিলেটিরা নিয়ে গেছে ঐ যেন পুষ্পকরথ,আর জেটপ্লেনের সাদা ধোঁয়া ভিক্টোরিয়ান ব্রাশিংএর মত মুখ বুজে পড়ে থাকা গুটানো ল্যাজের কুকুর, নীল আকাশ আমার জামা হয়ে বুকে বুকে ঘোরে,বৃষ্টি ভিজে মুখ গোমড়া করে আঁকড়ে ধরেছে নিওলিথ শরীর, রঙিন বর্ষাতিতে কিন্ডারগার্ডেনের সামনে শামুকের মত লুকিয়ে রাখা কচি শরীর ও বিশেষত স্তুনগুলি ফুটে উঠছে এক সীমাহীণ সবুজ পুকুরে।

আমার বিষন্ন লাগে,পুকুরেরও। দুজনে বসে বৃষ্টিতে ভিজি বা ভিজি না।আমার সাদা কালো জামা ভেঙে চুরে ইমরুলের বইএর মলাট হয়ে যায়, তখন আমি কালিকাপ্রসাদের কথা ভাবি, আ্যমোনিয়া প্রিন্ট ও পর্চা সকল তাদের জারিজুরি শেষে কোন লোহার আলমারির ভেতর শেখ হাসিনা হয়ে যায়, সে মলাটের পেছনে কালীকাপ্রসাদ ছেপে দেয় কি ভাবে,বা একপাতা ন্যাপা। আমি বসে থাকি, লবুপাতার গন্ধ আর নয়ডা সেক্টর ১৮ এর শনিবাজারের সেই নতুন আখেরগুড়ের ম ম গন্ধের গরুরগাড়ির কথা মনে পড়ে যায় হটাত যেন, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় একদিন সেই ছিপ হাতে নেমে গেলেন পুকুরে বর্ণমালার পানা সরিয়ে সরিয়ে, আমি তবু বসে থাকি। আলফা বিটা আসে দুপুরের পর , বৃষ্টির মত তারা প্রতি বছরই আসতে দেরি করে, যেমন রাত দিনের শুরুতেই আসে না।তাই অভিমানে আমরা কথা বলি না। অথচ সম্পৃতি, সার সার সবাই বসে, জলে মাছ চুপচাপ, সমবেত শোক মিছিলের মাঝে ট্রটোস্ফিয়ার থেকে দু-এক কলি বিদ্যুত উড়ে আসে।

আসলে আমরা সকলেই লিখে চলেছি ক্রমাগত, বৃষ্টির ভারে কুঁকড়ে যাওয়া এক অগভীর , যে দৃশ্যত সীমাহীণ পুকুরে তারা কচুরিপানা হয়ে কইমাছগুলোকে আড়াল করে রাখছে প্রতি নিয়ত।

বাংলাদেশ? আবার জিগায়।

ইঁটের মত দেওয়াল ছিল, ডিভিডির প্রহরীসজ্জায়, আর ঝলমলে ঠান্ডা আলো, শপিং মলগুলি আমাদের লাশকাটা ঘরের মত,ছিল কাক ছাড়া রমনা সবুজ সিএনজি অটোগুলি বৃষ্টিভেজা চাড়াই এর মত দু-একটি আমাদের বিক্ষিপ্ত আড্ডায়, পান্থপথের ঘরে বা চারুকলায়।

আমরা শবর-শবরী,জ্যামের রেলিংএ ঘেরা ধানমন্ডি ৩২ এর সার বাঁধা রিক্সার উপরে দেখি হেলিকাপ্টারের চক্কর, জলে ভেসে আসা জিয়ল মাছের মত ক্যাব বলতে পেলাম পারমানেন্ট এর দই আর রসের রসমালাই, এখন মরণচাঁদ মরণশীল,তাই আমি খুঁজিতে যাই না আর,তবু সেই এলিফ্যান্ট রোড গীতালি নামের জং ধরা দোকানে আমার হৃৎপিন্ড বাঁধা থাকে বিকালে অবশেষে। আর জোসেফ বসেজের মত হাত নাড়তে নাড়তে বসুন্ধরা সিটির পিছনের চিংড়ি মাছের মাথারা থাকে থাকে আছে ডিভিডির মত,তবু জোড়ায় জোড়ায় প্রাইভেট ইউভার্সিটি রিস্ট ওয়াচের মত, আমার সর্বাঙ্গে জল, ঐ হাজারে কাতারে হাজার ছাড়ানো ইলিশ মাছ ভিজে যাওয়া ঢাকাকে দ্য প্রফেটের মত একমিছিলহীণ শহর বানিয়ে দেয়, সেখানে ঘোড়া কেবল উড়ে যায় ডানা মেলে, জয়েস থাকলে বলতেন সূর্যের দিকে।

কলাবাগান জুড়ে এখনও ফেরিওলার মাদারি ডাক,আর কুমিল্লার পথে ডুবে যাওয়া রাস্টাঘাট,ক্ষেপটান জাল আর এক মানুষের মত শরীর নিয়ে মৃণালিনী মুখোপাধ্যায়ের ভাষ্কর্যের মাছ ধরার খাঁচা আমি দর করি, সে এক মৎসগন্ধা সময়, আর মোবাইলে ধরে রাখি সবুজ স্তনের ভাটিয়ারি । আর পতেঙ্গার সার সার ফ্ল্যাগ ওড়ানো ওপেন এয়ার ষ্টুডিও,কর্ণফুলির বেলুনওয়ালারা বন্দুক নাচায়, ঐ দ্বীপ আনোয়ারা, সে ত আমার বন্ধু মারিয়ার কথা আমার নয়,তাই ওই ঢেউ আমার ন্য়, আমি কেবল ডুবে যাই,ডুবে যেতে হাত বাড়াই, বাংলাদেশের সে রাজকন্যা কাঠির বদলেও ঘুম থেকে ওঠে না।

এই ভাবি আমি আমি এই আমি নেই

ভাবনা শুকিয়ে আসছে। লেখালিখি বন্ধ।তাগাদা এড়িয়ে তাই। যাবো কোথায়? বাইরে রোদ্দুর। অচেনা বই পড়তে ভয়। ঘুরে শুই। সাদা দেওয়াল দেখি। একটা টিকটিকি থাকলে বেশ হত। নেই। লোডশেডিং এ বন্ধ পাখা, ধীরে ধীরে সেটা থামে, দেখি।সাদা পাখায় কালো কালো ছোপ।

বাইরে বৃষ্টি। বালিশ চাদর ভিজে যায়, ফোঁটায় ছাটে। আমি লিখতে বসে বাইরে তাকিয়ে থাকি,খোলা কলমে কালি শুকিয়ে যায়।আমি এখনো আধা লিকুইড কালি ব্যবহার করি।কালো, ওপাশে জানালা সবুজে ভরে আছে,চোখ পড়ে ।আর এক হাল্কা সবুজের পুকুর। ওই পুকুরে নেমে যেতে থাকি। অন্তত হাতে একটা ছিপ থাকলেও মহাত্মা গান্ধির মত রিস্ক নেওয়া যেত।সে হাইট কেস, এরপর ছাদ। ছাদে উঠে দাঁড়ালে সে আরেক দিল্লির গল্প। এমন ছাদ , লোডশেডিং ও প্রেম নিয়ে আমি শুকিয়ে যাই সহসা। বেলুনের কত কিছু চাই,দুম করে ফাটে আর উড়ে যায় আকাশে।

পায়রা। আর জাম গাছে অন্য কোন পাখি। এ বছর জাম খাওয়া হয়নি। তরমুজও না। বাহ,এই যে কতদিন পাখি দেখিনা,সেটা? বেশ। পুরোনো বই খুলে বসে থাকি,কোন পালক নেই সেখানে বা শুকনো ঝাউপাতা। হালকা মলাটের ভেতর সন্দীপন বা আফসার আহমেদ। বড়জোর সূচিপত্রটুকু পড়ি বা ভূমিকা আর সেটা ফেলে রেখে উঠে যাই। পায়ারার মত যদি উড়ে যাওয়া যেত, এইসময়। সাদা কাজু বাদামের মত মেঘের আকাশে ভরসা পাই, আবার লিখব। শিগগির লিখব।

ফ্রিজে ইলিশ পড়ে আছে। আজ নাইটিঙেলে বসে সেটা মনে পড়ল। সেটা আদতে হাসপাতাল। জীবানুমুক্ত নারীদের দেখতে দেখতে কেন জানিনা মনে হয় সব ইলিশ মাছ বোয়িং বিমানের মত। ১০ বছর আগে একটা গল্প লিখেছিলাম। ইলিশের ব্রতকথা। এক রাজা আর তার তিন ইলিশ রানী। সে খাতা তো কবে হারিয়ে গেছে। কপি নেই। আর কি কি ছিল খাতাটায়? মনে পড়লনা। দেবব্রতের গান চালালাম, পুরোনো কথা মনে পড়ল সামান্য। সুচিত্রা সেনের চশমা পরা মুখ মনে পড়ল, টোল ট্যাক্সে হাচের গোলাপি-কালো লাইন গুলো মনে পড়ল, রুমা বোসের নাগাল্যান্ডের সেই সুতোয় বোনা ঝোলা ব্যাগ মনে পড়ল,সুচিত্রা পট্টনায়েকের রোজ রাতে ঘুমিয়ে পরার পর দেওয়া মিস কল দেওয়ার সময়সূচী মনে পড়ল কিন্তু খাতাটার কথা মনে নেই আর।

আমি আয়নার সামনে দাঁড়ালাম।ধুস, না কিছু নেই সেখানে। তারকোভস্কির মিরর দেখতে প্রথমবার, শিশিরে মারপিট করলাম, আর সাবটাইটেল ছাড়া নষ্টালজিয়া। আমি তো তখন বাতাসে উড়ি। আমি তখন গান গাই যার ভাষা আমি ছাড়া আর কেউ বোঝে না, ইয়াহু । আমাদের গঙ্গার চরে সে সময় মাটি কাটতে যেত সব, বাঁশের সাঁকো বেয়ে, পিঁপড়ে হয়ে মানুষেরা চলেছে সারাদিন। আমরা খাগের কলম চাইনিজ ইঙ্কে ডুবিয়ে ইরানের সিনেমার জন্য ড্রইং করাতাম, ফ্যানে ভাত আর আলু সেদ্ধ'র গন্ধ পেতাম। সাদা-কালো সব ছবি ছেড়ে আমি কবে রঙিন হলাম কে জানে?এখন আমার সমস্যা কিছুই মনে থাকছে না।

পুকুর পাড়ে কে? পিনাকী ঠাকুরের কবিতা

এখনও তুমি দোল খেল হাজরাতে, এটা ঠিক মেট্রোরেল হবে গড়িয়া অবধি, তুলিতে এখন চন্দ্রবিন্দু। কিন্তু আমার চোরা মফস্বল পুকুর ডোবা শিং মাছের মত জেগে ছিল।পিনাকী ঠাকুরের কবিতা এল বরষার মত, একগাদা আমার ট্রেন, স্কুল ও শহরতলি। আমাদের মেট্রো সেক্সের আগে খেলনা খেলার দিন। মাটির উঠোনে পিড়ি পেতে চুল কাটা, ছাতা হারাই নিয়মিত, আমাদের কুড়িয়ে আনা শিউলি ও বকুল ফুল। দুটোর মধ্যে কি ফারাক জান?পিনাকী জানে, বিন্দু বিন্দু শিশিরে সকাল ও বিকালবেলায় তুলে আনা।চিরসবুজ কল্কে ফলের মত ফ্রক আর দিদিদের সাথে মফস্বলের ছাদ, বেলফুলের টব, দরজায় মাধবিলতা বা টিকোমা, তখনও তো কালপুরুষ পড়িনি, পড়তে পড়তে ভাইকিং-এর সাথে শান্তিনিকেতন, কেয়ার ঝোঁপ, ভদকায় ফুটে থাকা পদ্ম। আর ওই মেঘ দেখা, আমি চিনছি চিলেকোঠা, বহুপরে শুনব,চিত্রকর আর আমি কতদিন আগে হয়ে উঠেছি চিল।

কাদামাটি কত প্রিয় ছিল তখন। কাঁচা নর্দমায় বানানো সেতুতে ছিলাম, আমের আঁটি থেকে আমার মত এক শিশু বেরিয়ে আসত তার মেরুন পাতা নিয়ে। আমি ছিলাম নদীর পাড় বরাবর দৌড়গুলোতে সবার পেছনে পড়ে। ফলত কাটা ঘুড়ি পড়ত নদীর জলে। জাম আর বকফুলের নরম ডাল বরাবরই ভেঙ্গে পড়ত, আমি নীচ থেকে দেখি, জামরুলের রূপ দেখে মুগ্ধ হয়ে যাই। পড়তে বসলেই লোডশেডিং, একমাত্র গল্পের বই পড়ার মত মিটমিটে আলো।আর তারজালি ভেঙ্গে পড়ল, মাকড়সারা কোথায় গেল? বর্ষার পিপড়ে মত সজনের গাছে শুয়ো পোকা, কাঁচ পোকার টিপ,পতঙ্গজগতে রবিন্দ্রনাথ লিখে দিচ্ছেন 'সে', কাগজের নৌকারা চলে গেল শিলাইদহে।


আমি শৈশবেই আটকে রইলাম। সাঁতার কাটতে কাটতে হাঁফ ধরে, গঙ্গায় জল এত কম মাটিতে পা ঠেকে কিম্বা আমি লম্বায় একটু বড় হয়েছি। আশোকাদের বাড়ির জানালায় এসে একটু থমকাই, রাত দশটায় কি করে ও? সাইকেলে মাটিতে পা দিয়ে দাঁড়াতে পারি। কতদুর দেখা যায় ওই জানালায়, কেবল অশোকাকে ন্য়। নেপু পটাদের বাড়ি ফুলে ফুলে ডেকে গেছে অশোকাকে একবার নিয়ে যেতে চাই,চিত্তবাবুর কাছে পড়তে গিয়ে আর কতটুকু সময় পাওয়া যায়? না, এবার পরীক্ষায় সব থেকে বেশি পেতে হবে।

কলকাতা আস্তে আস্তে গিলে খেল আমায়। নদীতে সত্যি সত্যি জল কমে গেল।সেখানে জেলা স্তরে ভিলিবল খেলা হলেও আমার আগ্রহ ছিল, চুপচাপ কেটে যেত বিকেল। লণ্চঘাটে সন্ধ্যা নামলে একে একে ফিরে আসে ইলিশের নৌকো, সুমন এলেন আর পাল্টে গেল মেঘমালার রং,দশ ফুট বাই দশ ফুটে রাত্রি কাটে নিমেশে। আমি ছবি আঁকি, লিখি আর সকাল হলে মিশে যাই কলকাতার ভিড়ে। কার্তিকের ভাসানে কফিতে মুখ পোড়ে শৈশব প্রিয়ার সিথির সিঁদুরে।আমার মফস্বল আমার থাকে আর সব পর হয়ে যায়।

পিনাকীর লেখা পড়তে গিয়েই বিপত্তি, পুনর্র্লিখিত হয়ে যায় আমার অন্যজীবন, নদীতে ততদিনে চর পড়তে শুরু করেছে, প্রেমের জ্বরে পলি, আমি দোল খেলি হাজরাতে, উঠে বসি মাঝরাতে, চন্দ্রবিন্দুর গান শুনে ভাবি স্কন্ধকাটার ভীড়ে আমি এক টুনটুনি পাখি। সাদা কাগজ শুকনো চামড়ার মত পড়ে থাকে আর পুকুর ভর্তি কচুরি পানা, আমি ঢিল ছুড়িনি কত দিন, টের পাই!

হুস-হাস চলে যায় আশা

রাস্তা। ভিজে ভিজে। চারপাশ ইডেন গার্ডেনের মত দূর আলোকস্তম্ভে আলো, গোপাল ভাঁড়ের রান্নার গল্প এসেই মিলিয়ে গেল, এখন এগুলো ভাবার সময় নয়। গাড়িতে গাড়িতে হাওয়া বাড়ে,হাত দেখালেও কেউ থামেনা। কেউ গতিও কমায় না, এতরাতে সব ট্যাক্সিতেই লোক? ভুল দেখি বলে মনেও হয় একবার। না, এখন ওসব ভাবার সময় নয়।

যে রাস্তা হেঁটে ১০ মিনিটে আসা যায়, সেটায় ৩০ মিনিট লাগলো, কেননা বারবার পেছন ঘুরে দেখছি গাড়ির হেডলাইট। ফোন বাজছে। হাত দেখালে গাড়ি থামছে না। রাত দেড়টা। ফোন বাজে, কেটে দিই, ধরি, কোন লাভ নেই। ঘড়ির শব্দ টের পাই। সার সার লরি স্যাট স্যাট বেরিয়ে যায়,ডিপসের নরকের টাইমের গল্পটা মাথায় আসে। ধুস।

সামপ্লেস এলসে বেয়ারা এসে বলে গেছে আর মদ দেওয়া হবে না। দেখলাম একে একে বাজনদাররা তার গীটার হাতে বেরিয়ে গেল। একা পড়ে আছে ড্রামসেট। এরপর উপরে উঠে অট্রিয়াম বন্ধ, কারণ আমাদের মোশন কনট্রোলের কথা শেষ হয়নি আর টিটো বলছে প্রসাদে ফাইভ পয়েন্ট ওয়ান বসে গেছে আমরা চাইলেই এখন একবার গিয়ে দেখে আসতে পারি।

তার বাড়িতে বোতল আছে জানার পরও আমি নেমে যেতে চাই রবীন্দ্রসদনে। যাওয়ার যায়গা তবে এখন এইচ এইচ আই বা তাজ বেঙ্গল। আজ থাক না, মোশন কন্ট্রোল করি, কাল না হয় দেখা হবে রীণাদির এডিটে। দেখি সেই বিশাল সাইজের গাড়িটা একা একা চলে গেল।
কেবল রাস্তা পড়ে আছে। তাকেই বেশ বন্ধু বন্ধু লাগছে , হিসাব করি আর ঘন্টা তিনেক কাটাতে পারলে সাকালে কিছু একটা পেয়ে যাব। তিনটে সিগারেট আছে, ঘন্টায় একটা। রেশন করতে হবে, নিজেকে বুদ্ধ-বুদ্ধ লাগে উইথআউট সুজাতা।


বেশ অন্ধকার।বাতি কি নিভে গেল? না আগে থেকেই জ্বলছিল না। বাঁ হাত নাড়াতে নাড়াতে ঝিম ধরে গেল। হাত পাল্টাই, গোঁ গোঁ শব্দে সব দুষ্ট লরিরা মাছের মত ছিটকে বেরিয়ে যায়। বাঁ হাতটা আদৌ কাজ করছে কি না দেখার জন্য একটা সিগারেট ধরাতেই হল। না: ঠিক আছে।

যেখানে শুরু নেই

স্লাইস পাউরুটির মত কোন শুরু নেই সে নদীর আয়োডেক্সের জেলির মত ঘন মেঘ আর ধূসর সকাল। শুরু নেই আবহমান উড়ে যাওয়া ক্যালেন্ডার পাতার, নারকোল তেলে সিক্ত চুল, ঝিরঝির হাওয়া তবু নারকোল পাতার ফাঁকে। বুক ও ঘড়ির কাঁটা ওঠানামা করে সময়ে অসময়ে, রাত দশটার কিছু পরে এস্কেলেটর থেমে যায় কোন নীল লাল শপিং মলে। এবং মেট্রো টিকিটেরা এক্স্ রে প্লেটের মত কেবল হাড়গোড় ধরে রাখে, মাংস সুরা ও ভালবাসার মত কোন শব্দ নেই তাদের বইতে।


একটা পৃথিবী ঘোরে কেবল ঘোরে, এভাবেই মাঝে মাঝে মাথা কমলালেবু হয়ে যায় এবং সান্ট্রারর বোতলে বনসাই হয়ে ওঠে উইশডম ট্রী। আমের চাটনীর মত গন্ধ লাগা ঘাসে প্রজাপতি পাখা নিয়ে বিলকুল হাসে আর সার্ফের ফেনারা উড়ে যেতে যেতে বলে, তাদেরও মেঘজন্ম ছিল, ছিল বারো পার্বণ ও বর্ষা। গোমুখ গঙ্গোত্রী হরতুকি বয়রা এবং গঁদের আঠার মত সুখ। কেবল এ সভ্যতার কোন শুরু নেই, অসভ্যতারও নেই, তাই হাঁসগুলি প্যাঁকপ্যাঁক করে জলে নেমে খোঁজে মার্জিত গুগলি আর সুভাষ বোসের অন্তর্ধান রহস্য।

তোরই জন্য আমি গান হয়ে উঠি

জানালায় হলুদ বালি আর নীল ঢেউ। কতগুলি বাচ্চা হাওয়া বল ছোড়াছুড়ি করে, আর ঐ দূরে মেঘেরা কাজলের মত চোখ নিয়ে, দেখে নিচ্ছিল আমাকে আর সব নয়নতারা ফুলগুলি ঝরে পরছিল স্নেহের মত। বালিতে কিছু দূর দূর আ্যন্টেনা পোঁতা, কিছু কাক বাংলা গানের মত কেবল বাজছে। ঐ ঘুলঘুলি থেকে পালক ঝরে পড়ল ঝগড়ার পর, এখন কেবল রোদ।

এই রাজা, সে ওলিওগ্রাফটি রাজা রবি বর্মার কোন পদ্ম ও হাঁস আর দেবী।মায়াময় ধুলো , ক্যম্বিস বলের ওপাশে তার ছেঁড়া সোফা , মিউ মিউ বিড়ালে উলের গুলিতে বাংলা গান। জানালায় পাহাড়, আকাশ ভরা জল,দরজায় গুঁজে রাখা খবরের কাগজ। জমছে তারা জমছে। ধুলো, প্যাঁচ ও ভীমসেনের ক্যাসেটের নাড়িভুড়ি।

এত ধিরে শব্দ লিখছি যেন সন্ধ্যা নামছে। শাঁখ বাজছে, জেট প্লেনের থেকে যাওয়া ধোঁয়া মত।আসলে সাদা মার্বেল মেঝেতে তার আলতার ছাপ, যে কনিক ইকোয়েশন নিয়ে সম থেকে তেহাই যাওয়া যায়, বাংলা গান, সেই কুকুরটি এখনও দাঁড়িয়ে, ওরে বোকা গ্রামাফোন! আসলে জানালা খোলা, পাল্টে যাচ্চে সচল ট্রেনের মত।

গরুর গাড়িতে এবং মহাকাশেও

বোর হবেন না। এটাও লেখালিখি বিষয়ক। বোর হলে ট্যাবলেট খান , ক্ষতি নেই, টয়লেটে গেলেও নেই। সুতরাং আক্ষ্যানের প্রবেশ।


সুনিতা রান্না করত, চুল বাঁধত আর মহাকাশে উড়ত। উড়তে উড়তে একদিন দেখল পাশ দিয়ে পাখি উড়ে যাচ্ছে। দিব্য ।স্লিম-স্লিক-ঘ্যামচ্যাক।যেমন ইচ্ছা তেমন কর্ম,শুরু হল কঠোর সাধনা। মাহাকাশ যানে জিম বসল, গরুর গাড়ির মত এক কম্বো জিম- ওপরে ট্রেডমিল নিচে বাইক মানে নিচে চাকা ওপরে তক্তা তারওপর ফাঁকা- গুগুলে গরুর গাড়ির ছবি দেখে নিন।ধিকির ধিকির সারাদিন, খাওয়া দাওয়া সব বাতিল।


সুনিতা ঘুমোতে যাওয়ার ঘুমোতে আগে সব আসন করে, ঘুমিয়ে শবাসন করে, সে এক মার কাটারি ব্যপার- ওসব তোমরা বুঝবে না, বুদ্ধ, ভক্ত প্রহ্লাদ, নবিজি-টবিজিরাই এক বুঝবেন।যাইহোক তার সাধনার ঠেলায় ঢাকা থেকে সাধনা অসুধালয় গেল উঠে।কতদুর উঠল তা জানা যায় নি অবশ্য, তবে আমেরিকা থেকে সুনিতা উইলিয়ামস মহাকাশের কিছু ছবি খিচে এনেছেন আমরা গভীর ভাবে নিরীক্ষা করলেই তা জানতে পারব।

যেখানে আমার ভ্যানতারা শুরু

হু, রচনাই বটে। এ গরুর রচনা নয়, পোসেনজিতের কোমর জড়িয়ে ধরে নাচা রচনা বেনাজ্জিও নয়।তার মানে এতে মাংস কম, তাই আদতে মালটা ফালতু।

তবু লেখালিখি আছে, স্রেফ বাজারের ফর্দের মত। সার্ফ এক্সেল কিছুতেই সেটা ধুয়ে সাফ করতে পারছে না। দিনে লিখি, দিন গেলে লিখি, সামনে দিয়ে মেয়ে গেলেও লিখি। কাজেই এটা লেখা জন্ম, বাড়তি চাপ নিতে পারছি না। মানে মাথা ব্যথা।কি নয়ে লিখব বা লিখে কি করব, সে নিয়েও ভাবনা নেই। সবই ফুলটাস ব্লগ। বাপের পয়সায় কোকাকোলা খাওয়া ছেড়ে দিয়েছি, কিন্তু অন্যের পেছন মেরে কোকাকোলা খাই, তাতে এটা-সেটা মিশিয়েও।তার পর বেজায় ফুর্তি হয়ে রাত্তিরে এদিক-ষেদিক ঘুরি। তখন লেখা হয় না। মাথায়ই আসে না। তখন কোন দিন ঝগড়া করি। যা নিজেও ভাল করে বুঝি না, যে খটমট তত্ব নিজে ভাল বুঝি না বা তাই নিয়ে হ্যাজাতে পাছন্দ করি না, সেগুলো প্রিয় হয়ে যায়, হ্যাজাই। চ্যাচাই। মারপিটও করি বলে শুনেছি, কটুক্তিতে দেশ উদ্ধার। মানে কেসটা সিরিয়াস। তাহলে সিরিয়াস হয়ে গেলে লেখালিখি করার আর প্রশ্ন নেই, তখন কেবল সিরিয়াস।