Monday, November 26, 2007

এই ভাবি আমি আমি এই আমি নেই

ভাবনা শুকিয়ে আসছে। লেখালিখি বন্ধ।তাগাদা এড়িয়ে তাই। যাবো কোথায়? বাইরে রোদ্দুর। অচেনা বই পড়তে ভয়। ঘুরে শুই। সাদা দেওয়াল দেখি। একটা টিকটিকি থাকলে বেশ হত। নেই। লোডশেডিং এ বন্ধ পাখা, ধীরে ধীরে সেটা থামে, দেখি।সাদা পাখায় কালো কালো ছোপ।

বাইরে বৃষ্টি। বালিশ চাদর ভিজে যায়, ফোঁটায় ছাটে। আমি লিখতে বসে বাইরে তাকিয়ে থাকি,খোলা কলমে কালি শুকিয়ে যায়।আমি এখনো আধা লিকুইড কালি ব্যবহার করি।কালো, ওপাশে জানালা সবুজে ভরে আছে,চোখ পড়ে ।আর এক হাল্কা সবুজের পুকুর। ওই পুকুরে নেমে যেতে থাকি। অন্তত হাতে একটা ছিপ থাকলেও মহাত্মা গান্ধির মত রিস্ক নেওয়া যেত।সে হাইট কেস, এরপর ছাদ। ছাদে উঠে দাঁড়ালে সে আরেক দিল্লির গল্প। এমন ছাদ , লোডশেডিং ও প্রেম নিয়ে আমি শুকিয়ে যাই সহসা। বেলুনের কত কিছু চাই,দুম করে ফাটে আর উড়ে যায় আকাশে।

পায়রা। আর জাম গাছে অন্য কোন পাখি। এ বছর জাম খাওয়া হয়নি। তরমুজও না। বাহ,এই যে কতদিন পাখি দেখিনা,সেটা? বেশ। পুরোনো বই খুলে বসে থাকি,কোন পালক নেই সেখানে বা শুকনো ঝাউপাতা। হালকা মলাটের ভেতর সন্দীপন বা আফসার আহমেদ। বড়জোর সূচিপত্রটুকু পড়ি বা ভূমিকা আর সেটা ফেলে রেখে উঠে যাই। পায়ারার মত যদি উড়ে যাওয়া যেত, এইসময়। সাদা কাজু বাদামের মত মেঘের আকাশে ভরসা পাই, আবার লিখব। শিগগির লিখব।

ফ্রিজে ইলিশ পড়ে আছে। আজ নাইটিঙেলে বসে সেটা মনে পড়ল। সেটা আদতে হাসপাতাল। জীবানুমুক্ত নারীদের দেখতে দেখতে কেন জানিনা মনে হয় সব ইলিশ মাছ বোয়িং বিমানের মত। ১০ বছর আগে একটা গল্প লিখেছিলাম। ইলিশের ব্রতকথা। এক রাজা আর তার তিন ইলিশ রানী। সে খাতা তো কবে হারিয়ে গেছে। কপি নেই। আর কি কি ছিল খাতাটায়? মনে পড়লনা। দেবব্রতের গান চালালাম, পুরোনো কথা মনে পড়ল সামান্য। সুচিত্রা সেনের চশমা পরা মুখ মনে পড়ল, টোল ট্যাক্সে হাচের গোলাপি-কালো লাইন গুলো মনে পড়ল, রুমা বোসের নাগাল্যান্ডের সেই সুতোয় বোনা ঝোলা ব্যাগ মনে পড়ল,সুচিত্রা পট্টনায়েকের রোজ রাতে ঘুমিয়ে পরার পর দেওয়া মিস কল দেওয়ার সময়সূচী মনে পড়ল কিন্তু খাতাটার কথা মনে নেই আর।

আমি আয়নার সামনে দাঁড়ালাম।ধুস, না কিছু নেই সেখানে। তারকোভস্কির মিরর দেখতে প্রথমবার, শিশিরে মারপিট করলাম, আর সাবটাইটেল ছাড়া নষ্টালজিয়া। আমি তো তখন বাতাসে উড়ি। আমি তখন গান গাই যার ভাষা আমি ছাড়া আর কেউ বোঝে না, ইয়াহু । আমাদের গঙ্গার চরে সে সময় মাটি কাটতে যেত সব, বাঁশের সাঁকো বেয়ে, পিঁপড়ে হয়ে মানুষেরা চলেছে সারাদিন। আমরা খাগের কলম চাইনিজ ইঙ্কে ডুবিয়ে ইরানের সিনেমার জন্য ড্রইং করাতাম, ফ্যানে ভাত আর আলু সেদ্ধ'র গন্ধ পেতাম। সাদা-কালো সব ছবি ছেড়ে আমি কবে রঙিন হলাম কে জানে?এখন আমার সমস্যা কিছুই মনে থাকছে না।

No comments: